আমার জিবনে প্রথম ট্রেনে ভ্রমন - Merchant Technology

 




                                               ট্রেনে ভ্রমন


 ভ্রমন সর্বদাই আনন্দের। এই আনন্দের সঙ্গে ভ্রমনে যুক্ত হয় জ্ঞানলাভ। প্রকৃতপক্ষে, ভ্রমনের ফলে ম্নুষের চিত্ত যেমন প্রফুল্ল হয় ঠিক তেমনি সে অনেক অজানার সন্ধান লাভ করে।

 

ভ্রমণ হলো এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বেডানো বা পর্যটন। ভ্রমনে মানবমনে আনন্দ দান করে এবং জ্ঞানের পিপাসা মেটায়। সে কারনে অনেকে এটি কর্তব্যকর্ম বলেও মনে করেন।

সাধারনত: স্থলপথ, জলপথ, আকাশপথ এই তিন পথেই ভ্রমণ করা যায়। স্থলপথে বাস, ট্রেন, সাইকেল, মোটরসাইকেল,ট্যাক্সি ভ্রমণ ইত্যাদি হতে পারে। তবে পরিসর বড়, দীর্ঘ পথ, ক্লান্তিহীনভাবে ভ্রমনের  পক্ষে আরামদায়ক রেল ভ্রমণ। এতে পথে অনেক স্টেশন থাকায় না স্থনের বিচিত্র মানুষের সঙ্গে ক্ষণিক দেখা হত্তয়ার সুযোগ ঘটে।

পরীক্ষা শেষে আমার স্কুল বন্ধ। সকাল সাড়ে আটটায় কমলাপুর স্টেসনে গিয়ে পৌঁছি। উদ্দেশ্য গ্রামের বাড়ি সরিষাবাড়ী যাব। আমার বাবা আগেই ট্রেনের টিকিট কেটে রেখেছিলেন। আমরা স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনের “সুলভ” শ্রেণিতে নির্ধারিত আসনে বসলাম। ট্রেনের নাম ’অগ্নিবীণা’ । সকাল ঠিক  নয়টাই ট্রেন কমলা স্টেশন ছাড়ল।



সুলভ’ শ্রেণীতে উঠলে বিচিত্র ধরণের  মানুষের দেখা মেলে। নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত নানা ধরণের নারী-পুরুষ সেই সঙ্গে শিশুরা আসনে বসেছে। দুজনের আসনে তিন বা চারজনও কষ্ট করে বসে ছিলেন।

 

আমি ইতোমধ্যে জানালার ধারে গিয়ে বসেছি। দেখলাম ট্রেন তেজগাঁও, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, জয়দেবপুর ইত্যাদি স্টেশনে ক্ষাণিক দাঁড়াল। আর স্টেশনে অপেক্ষমাণ মানুষগুলো জলদি উঠে পড়ল ট্রেনে। ট্রেনেই উঠেই তাদের সব ব্যস্ততা কমে যায়। যে যার আসন খুঁজে নিয়ে সেখানে বসে যান।

 

 

জানালার ধারে বসে আছি। মনে হচ্ছে মাঠ-ঘাট-গাছপালা দৌড়াচ্ছে। আমর চক্ষু স্থির। কয়েকটা পাখি আকাশে পাখা মেলে আমাদের পাশাপাশি চলে আবার পিছিয়ে পড়ে। মনে হয়, সারা পৃথিবী যেন ঘুরছে, আর আমরা স্থির আছি। ট্রেন থেকে শূন্য মাঠ দেখা যায়। কিছুদিন আগেও এখানে সোনালি ধান ছিল। গ্রাম বাংলার রুপ যে এত সুন্দর তা এর আগে আমার চোখে এভাবে ধরা পড়ে নি।

 

ট্রেনে ভ্রমণে প্রথমেই উল্লেখযোগ্য স্থান ও স্থাপনার মধ্যে পড়ল কমলাপুর রেলস্টেশন। দীর্ঘতম প্লাটফর্ম আছে এই স্টেশনে। তারপরও তেজগাঁও আসার আগেই দূর থেকে চোখ পড়ে ঢাকার চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা বা এফডিসি । ভাওয়ালের জমির ওপর দিয়ে জয়দেবপুরে যাবার আগেই ঢাকা বিমান বন্দর চোখে পড়ে । ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। জামালপুরে নবনির্মিত পাওয়ার প্যাক ইত্যাদি স্থান ও স্থাপনার সঙ্গে পরিচিত হই।

 

ট্রেনে ভ্রমণ না করলে জীবনের  বিরাট অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্চিত  হতাম। বিচিত্র  মানুষের সঙ্গে পরিচয় , নানা স্থান অবলোকন ,  বিভিন্ন স্থাপনা দর্শন করে নানা অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম । সাত ঘন্টা ট্রেন ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আমার জীবনে সারা জীবনের অভিজ্ঞতা স্বরুপ।

 

 

 

 

 

Post a Comment

0 Comments