কলা- কলা খাওয়ার উপকারিতা। কলা খেলে কি হয়? কলা কেন খাবেন? [Merchant Technology] 2021

 


সবচেয়ে সহজলভ্য একটি ফল হলো কলা। দেশের যেকোন অঞ্চলে রাস্তার আশপাশের চায়ের দোকানে তাকালেই কলা খাওয়ার সুযোগ মিলে। বাজারে গেলেই কলা দেখে অনেকে খেয়ে নিচ্ছেন দুটি কলা । কেউবা আবার অফিস থেকে ফেরার পথে এক কাঁদি কলা হাতে নিয়ে ঢুকছেন বাসায়। দৃশ্য সচরাচরই দেখা যায়।  সকালের নাস্তার টেবিলে অনেকেই রেখে দিয়েছেন কলা। ছোট-বড় প্রায় সকল বাচ্চাদেরকেও কলা খাওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়। আমরা প্রতিনিয়ত যে এতো কলা খাচ্ছি, আসলে কি উপকার আছে এই কলায়? ভেবেছেন কখনও? চলুন জেনে নেই কলার গুণাগুণ।

গুণে ভরা ফল হলো কলা। এর পুষ্টিগুণ অধিক। এতে রয়েছে মানব দেহে দৃঢ় টিস্যু গঠনকারী উপদান। যেমন: ভিটামিন , আমিষ এবং খনিজ পদার্থ। কলা হলো ক্যালরির উৎপাদনের একটি ভাল উৎস।

প্রতি ১০০ গ্রাম যা পাওয়া যায়

পানি - ৭০.%

শর্করা -  .%

আমিষ - .%

ক্যালসিয়াম  - ৮৫ মিলিগ্রাম

ফ্যাট (চর্বি) - .%

ফসফরাস  - ৫০ মিলিগ্রাম

খনিজ লবণ - .%

আয়রন  - . মিলিগ্রাম

আঁশ - .%

ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স - মিলিগ্রাম

 

এছাড়াও ভিটামিন - C রয়েছে প্রচুর।

কলা পাকলে এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমাণ বহুগুণ বেড়ে যায়। মানব শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কলা শরীরে শক্তি যোগায় এবং বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

দেহে কর্মশক্তি যোগায় কলা

কলার রয়েছে তিন ধরনের প্রাকৃতিক চিনির শক্তিশালী মিশ্রণ।

যেমন:

১) ফ্রুক্টোজ

২) গ্লুকোজ এবং

৩) সুক্রোজ

যা মানবদেহে রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখে এবং যোগান দেয় দিনের প্রয়োজনীয় কর্মশক্তি। তাই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রাখুন কলা এবং যখন অতিরিক্ত ঘর্মাক্ত হয়ে দুর্বল অনুভূব করবেন তখনই খাবেন কলা । শরীরে শক্তি আসবে।

কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ কারী ফল কলা

কলার মধ্যে থাকা ফাইবার হজমে সহায়তা করে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। এর মধ্যে থাকা প্রচুর পরিমাণে আঁশ পেট পরিষ্কারে বেশ সহায়তা করে। তাই প্রতিদিন ২টি করে কলা খেলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হবে। ছাড়াও হজম শক্তিও বৃদ্ধি পাবে।

প্রোবায়টিক যোগায়

 কলা প্রোবায়টিকের একটি অন্যতম প্রাকৃতিক উৎস। এতে রয়েছে ফ্রুক্টোওলিগোস্যাকারাইড (FOS) যা মানব দেহে উপকারী ব্যাক্টেরিয়া বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। আমাদের দেহের অন্ত্রে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রোবায়টিক গ্রহণ করা অতি প্রয়োজন।


উচ্চ রক্তচাপ কমায় এই ফল

কলায় উচ্চমাত্রার পটাসিয়াম নিম্নমাত্রার সোডিয়াম  থাকায় শরীরের রক্ত চাপ কমাতে বেশ সাহায্য করে। এছাড়াও হৃদরোগের জন্য কলা অত্যন্ত সহায়ক। স্ট্রোক প্রতিরোধ কারী ফল কলা। যারা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগেন তারা প্রতিদিন ২টি কলা খেতে পারেন।

রক্তস্বল্পতা দূর করে

কলাতে রয়েছে আয়রন রক্ত কোষকে উজ্জীবিত করে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। যা রক্তস্বল্পতা দূর করে থাকে। এর ফলে দেহে অ্যানিমিয়ার সম্ভাবনা কমে। এমনকি অ্যানিমিয়া সারাতেও সাহায্য করে এই ফলটি।

স্নায়ুকে শান্ত করে

কলা কার্বোহাইড্রেটে পরিপূর্ণ হওয়ায় রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখে এবং স্নায়ুবিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। কলায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-বি পাওয়া যায়। যা স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করে।

দুশ্চিন্তা দূর করে কলা

দুশ্চিন্তা দূর কারী ফল কলা। মানসিক চাপ কমায় এবং একইসঙ্গে মানসিক কর্মদক্ষতাও বৃদ্ধি করে। তাই যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বা স্ট্রেসফুল কাজ শুরু করার পুর্বে একটি কলা খেয়ে নিতে পারেন, অনেক উপকার পাবেন।

কঠিন কাজে ও ব্যায়ামে শক্তি যোগায়

যারা কঠুর পরিশ্রম বা ব্যায়ামে করেন তাদের বলছি। শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়ামে শক্তি যোগায় কলা। এটি শরীরের পেশি, লিগামেন্ট রগ শক্তিশালী করে তোলে। যেহেতু এটি শারীরিক পরিশ্রমে প্রচুর সহায়তা করে, তাই ব্যায়াম করার পূর্বে কলা খাওয়া অত্যন্ত উপকারী।

ভালো ঘুমের সহায়ক

কলায় ট্রিপটোফেন নামক এক প্রকার অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে যা সেরোটিন নামক হরমোন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই হরমোন ঘুমের জন্যও সহায়ক।

ওজন কমাতে সাহায্যকারী

কলা অনেক দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে। মাঝারি আকৃতির একটি কলায় মাত্র ১০৫ ক্যালরি থাকে। এছাড়াও কলাতে রয়েছে ক্রোমিয়াম নামক খনিজ পদার্থ, যা বিপাক ক্রিয়ায় সহায়তা করে।

ধূমপান ছাড়তেও সহায়তা করে এই কলা

ধূমপান ছাড়তে চাইলে আজ থেকেই বেশি করে কলা খাওয়া শুরু করতে পারেন। কারণ কলায় উপস্থিত ভিটামিন বি৬, বি১২, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম শরীর থেকে নিকোটিনের প্রভাব দূর করতে অনেক সাহায্য করে।

এছাড়াও কলাতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালিশিয়াম রয়েছে যা শরীরের হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট।

 

বাত/হাড় ও মাথাব্যাথা ব্যাথা কমাতে

যারা হাড়ের বা বাতের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের খাদ্যাভাসে কলা রাখতে পারেন। কলায় প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম থাকায় এটি মাথাব্যাথার প্রাকৃতিক নিরাময় হিসেবে কাজ করে।

 

Post a Comment

6 Comments