পিরিয়ড নিয়ে বিয়ের পীড়িতে বসে আছে সারা,
এদিকে তার বরের আসার কোনো খবরই নেই। খুবই রাগ হচ্ছে সারার,
আবহাওয়াটাও তেমন ভালো নয়, মেঘাচ্ছন্ন হয়ে আছে আকাশ। যেকোনো সময় বৃষ্টি নামতে পারে,
তবে বৃষ্টি আমার অনেক প্রিয়, ছোট থেকেই প্রায় সব মেয়ের মনেই একটা ইচ্ছে থাকে। তার প্রিয়তম কে নিয়ে একসাথে বৃষ্টিতে ভিজবে, তেমনি আমারো ইচ্ছে আছে বিয়ের পরে আমার স্বামী কে নিয়ে দুজন একসাথে বৃষ্টিতে ভিজবো। বিধাতা যেনো আমার সেই ইচ্ছে টা বিয়ের প্রথম দিনই পূর্ণ করে দিচ্ছেন।
তবে বোকা টা এতো দেরি করছে কেনো,,? এর জন্য অনেক রাগও হচ্ছে সারার।
সারা মনে মনে ভাবছে , বিয়ের প্রথম দিনই এমন লেট না জানি সারাজীবন কি রয়েছে আমার কপালে,,?
সবে ইন্টার পরিক্ষা দিয়েছে সে, এখনো রেজাল্ট বের হয় নাই, এর মধ্যেই বিয়ে ঠিক করে বসলেন বাবা,
এখনো দেখিনি তাকে, সে দেখতে কেমন তাও জানি না,
সব কিছু বাবাই ঠিক করেছে! আচ্ছা সে দেখতে কি খুব বাজে হবে? নাকি আমার সপ্নের রাজপুত্রে মত হবে?
না না, বাজে দেখতে হবে কেনো আমার বর কে, যেহেতু আমার বাবার পছন্দ এটা সেহেতু তাকে দেখতে আমার সপ্নের রাজপুত্রের মতই হতে হবে। আমার বাবার চয়েস কখনো বাজে হতেই পারে না।
এরকম হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সারার মনে, তার সাথে ভয়ভয় করছে।
এদিকে ন্যাপকিন টাও যেনো ফুরিয়ে আসছে তার। কি হবে বা কি হতে চলেছে বুঝতে পারছে না লাবিনা।
এদিকে ঘড়িতে সময় রাত প্রায় ৯-১০ টা,
সারার ভাবনার অবসান ঘটিয়ে একটা বড় গাড়ি এসে থামলো সারাদের উঠোনে।
গাড়ি টাকে দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে, গোলাপ, গাদা, ও নানা রকম ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে।
গাড়ির মধ্যে থেকে ৫-৬ জন সহ বেরিয়ে এলো একটা ছেলে, গাল ভর্তি দাড়ি, হাতে সুন্দর ঘড়ি, পরনে শেরওয়ানি মাথায় পাগড়ী একটু চিকন তবে অনেক স্মার্ট একদম আমার সপ্নের রাজপুত্র,
উফফ দেখতে তো সেই জোস আমার বর টাকে।
কিন্তু উপর থেকে দেখেতো আর মানুষকে বিচার করা যায় না। কার মনে কি আছে কে জানে..? সে কি ভালো হবে..? আমাকে কি অনেক ভালোবাসবে..? নাকি আমার কপালে লাঠি ঝাঁটা রয়েছে..?
ধুর কি ভাবছি এগুলো, এই সারাকে মারার সাহস কারো আছে নাকি..? (ছোট থেকেই চঞ্চল ও দুষ্টু টাইপের মেয়ে সারা)
তবে আমার বরটা গাড়ি থেকে নেমে যতোই আমার দিকে এগিয়ে আসছে ততোই যেনো ভয় ভয় বেড়েই চলেছে আমার মনে।
একপর্যায়ে আমার সামনে চলে আসলো। বসে পড়লো আমার পাশে। বর কে দেখে হই-হই পরে গেলো পুরো বিয়ের আসর।
আমি স্পষ্ট দেখতে পেলাম সে আমার দিকে আরচোখে তাকিয়ে আছে।
আমিও আরচোখে তাকিয়ে আছি তার দিকে,
এ যেনো এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ।
আমার বরের একদম গাঁ ঘেষে গিয়ে বসলো আমার চাচাতো বোন মিশু। শুধু বসলে কিছু একটা হতো না তার সাথে মিশু ওর গাল ধরে টেনে টেনে বলছে,
মিশু-- বাহ দুলাভাই বাহ্, আপনি তো দেখতে পুরাই উফফ!!। এরকম অনেক কথাই বলছে মিশু। অনেক রাগ হচ্ছে আমার। মনে হচ্ছে মিশুর চুলের মুঠি ধরে একদম ছিরে দেই আমার বর কে উফফ বলা।
তবে ইচ্ছে থাকা শর্তেও মিশুর চুলের মুঠি ধরতে পারলাম না। কারন লোকজন বলতে পারে বাবা বিয়ে হতে না হতেই বরের জন্য এতই দরদ। তবে তার চোখে মুখে কোনো রকম রিয়াকশন দেখতে পেলাম না।
অবশেষে বিয়েটা হয়ে গেলো,
তখন রাত প্রায় ১২ টা, বাহিরে অনেক বৃষ্টি হচ্ছে,
শশুর বাড়িতে বর এর ঘরে বসে আছি, আরে বর এর ঘর বলছি কেন,? এটাতো এখন আমারও ঘর ।
এতক্ষণেও আসছে না কেনো হাতির ডিম টা, আমাকে বাসর ঘরে বসিয়ে রেখে নিশ্চই বন্ধুদের সাথে মজা করা হচ্ছে তাই-না? একবার শুধু আয় না তারপর দেখ তোর মজা আমি দেখাইতেছি।
হুট করে দরজাটা খুলে গেলো, ঘরের মধ্যে প্রবেশ করলো আকাশ। আকাশ সারার বরের নাম। আকাশকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে সে বৃষ্টিতে হয়তো ভিজে এসেছে। কেনোনা তার জামাকাপড়ে ও চুলে ছিটেফোঁটা পানি দেখা যাচ্ছে।
ধীরপায়ে এগিয়ে আসছে সে আমার দিকে, কেমন যেনো ভয় ও লজ্জাজড়িত একটা অনুভূতির সৃষ্টি হচ্ছে মনে।
লোকটাকে দেখতে তো ভালোই মনে হচ্ছে, সে কি আজ রাতেই তার পুরুষত্ব ফলাতে চাইবে আমার উপর। না না এমনটা হলে ব্যপারটা খুবই খারাপ হয়ে যাবে। আমি এখন কি করবো..? আমার পিরিয়ডের কথাটাও তো তাকে বলতে পারবো না লজ্জার কারনে!
সে একদম আমার কাছে চলে আসলো, এবং আমার সব ভুল ভাঙ্গিয়ে আমার দিকে একটা প্যাকেট বাড়িয়ে দিলো!!।
সারা ভয়ে ভয়ে হাত টা আকাশের দিকে বাড়িয়ে দিলো। প্যাকেট টা হাতে নিলো।
সারা-- এএএএটা কিহ…?(ভয়ে আমতাআমতা করে)
আকাশ-- নিজেই খুলে দেখুন!
সারা--( শালা বর তোর বলতে সমস্যা কোথায়… দিতে পারলি আর বলতে পারবি না)
আকাশ-- কি হলো এত কি ভাবছেন..? খুলে দেখুন।
সারা-- হুম দেখছি..। (প্যাকেট টা খুলে সারা একটা ন্যাপকিন আবিষ্কার করলো) আপনি জানিলেন কিভাবে এটা আমার দরকার,,,?
আকাশ-- সময় হলেই জানতে পারবেন..! এখন ওয়াশরুমে গিয়ে চেঞ্জ করে আসুন..! কি হলো যান ।
সারা -- হুহ্ যাচ্ছি (শালা হাতির ডিম আমাকে চোখ রাঙানো, কিছু দিন যাক তোর চোখ রাঙানো আমি বের করবো)
ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসার পরে সারা দেখতে পেলো আকাশ খাটের উপর বসে আছে। আকাশ মাথা টা তুলতেই সারা কে দেখে চোখ যেনো সরাতেই পারছে না। বাহ মেয়েটাতো অনেক মায়াবী, ভালোভাবে দেখা হয় নাই এ পর্যন্ত। সবকিছু যেনো হুট করেই হয়ে গেলো, আমার বউ টা এত সুন্দরী আর আমি মাত্র এটা বুঝতে পারলাম, তবে সারাকে আগেই বুঝতে দেওয়া যাবে না যে আমি ওকে দেখে ক্রাশ খেয়েছি।
আকাশ-- এখন শুয়ে পড়েন আপনার অনেক রেস্ট এর প্রয়োজন।
সারা—হুমম.. আপনি ঘুমাবেন না,,?
আকাশ-- হুমম আমিও ঘুমাবো, আপনি আগে শুয়ে পড়েন তারপর আমি শুইতেছি।
সারা ভদ্র মেয়ের মত এসে বিছানায় শুয়ে পরলো। তার কিছু সময় পরে আকাশও সারার বিপরীত দিক হয়ে শুয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘুমিয়ে গেলেন।
তবে সারা এখনো ঘুমায় নাই, সে ভেবে চলেছে, ছি ছি ছি আমার বর টা এত ভালো আর আমি তার সম্মন্ধে কি কিই না ভাবলাম ছি।
আজ আমাদের বিয়ের প্রথম রাত কই দুজনে সারারাত গল্প করবো তা-না গাঁধাটা আগেই ঘুমিয়ে গেলো। একদম ভিতুর ডিম একটা,
তবে চান্দু আমার হক তো আমি পুরোন করে নেবোই নেবো হুমম।
বলেই সারা আকাশকে পিছন থেকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরলো।
সকালে ঘুম থেকে উঠে যা হলো তা দেখে তো আমি অবাক।
:
:
চলবে???????
পরবর্তী পর্ব পড়ার আমন্ত্রন রইল। ধন্যবাদ।
এমন আরও মজার গল্প পড়তে ফলো করুন [Merchant Technology]
3 Comments
good
ReplyDeletevery good
ReplyDeleteThanks
ReplyDelete